সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৫ অপরাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : আসন্ন রমজান মাসের আগে রাজধানীর বাজারে চিনি, ডাল, আদা ও মসলার দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। রমজানের বাড়তি চাহিদাকে পুঁজি করে খুচরা বাজারে চিনির দাম বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। এছাড়া আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি ও মাছ। কয়েকটি সবজি বাদে বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকার মধ্যে।
তবে নতুন করে বাড়েনি পিয়াজের দাম। আর দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। রাজধানীর কাওরান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজান সামনে রেখে সপ্তাহের ব্যবধানে চিনি, ডাল, আদা ও মসলার দাম আরো বেড়েছে।
এসব পণ্যের দাম কেজিতে প্রায় ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে খুচরা বাজারে চিনির দাম প্রায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। অথচ বিশ্ববাজারে চিনির দাম কমেছে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্যমূল্যের তালিকা অনুযায়ী, এক মাস আগে প্রতি কেজি চিনির দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ছিল। এখন যা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বিশ্বব্যাংকের গত ২৩শে এপ্রিলের বৈশ্বিক পণ্যবাজারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতি টন চিনির দাম ছিল ২৯০ ডলার, যা মার্চে ২৮০ ডলারে নেমেছে। পাইকারি ব্যবসায়ী জামিল হোসেন বলেন, রমজানের আগে বাড়তি চাহিদার কারণে মিলগুলোতে পণ্য সরবরাহে চাপ তৈরি হয়। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে দাম কিছুটা বেড়ে যায়।
রমজান উপলক্ষে চিনির দর কমিয়েছে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি)। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনি ৬৫ টাকা এবং খোলা চিনি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হবে। বিএসএফআইসির চিনির দর এর আগে ছিল প্যাকেটজাত ৭০ টাকা এবং খোলা চিনি ৬০ টাকা।
রমজানে বাড়তি চাহিদা থাকায় সরু মসুর ডাল, অ্যাংকর ডাল ও খেসারির ডালের দাম বেড়েছে। টিসিবির দর অনুযায়ী, এক মাস আগে প্রতি কেজি দেশী ডালের দাম ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা ছিল। এখন যা ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নেপালি ডালের কেজি ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা। বর্তমানে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপাশি আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আদা ও মসলা। গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে আদা। টিসিবির হিসাবে এক মাস আগে প্রতি কেজি আদার দাম ৯০ থেকে ১২০ টাকা ছিল। এখন যা ১০০ থেকে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে মসলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এলাচের দাম। টিসিবির দর অনুযায়ী, এক মাস আগে প্রতি কেজি এলাচের দাম ১৭০০ থেকে ২২০০ টাকা ছিল। এখন যা ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাইকারি বাজারে পিয়াজ ও রসুনের দাম কমেছে। পাইকারি বিক্রেতারা জানান, দেশি রসুনের কেজিপ্রতি দর ৬৫ টাকায় উঠেছিল। এখন তা কমে ৫৫ টাকায় নেমেছে। চীনা রসুনও কেজিপ্রতি ৫ টাকার মতো কমে ৯০ থেকে ৯২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাশাপশি সপ্তাহ খানেক আগে ডিমের ডজনপ্রতি দর ১০৫ টাকা ছিল। এখন তা ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির দর কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের দাম আগের মতোই চড়া। সবজির দামও কমছে না। ফলে বাজারের বড় অস্বস্তি এখন সবজি ও মাছ। গরুর মাংসের দামও চড়া।
এদিকে বিভিন্ন কাঁচাবাজার দেখা গেছে, আগের মতই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। বাজার ও মানভেদে কাঁচা পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা কেজি। শসা ৫০-৬০, বেগুন ৬০-৭০, পাকা টমেটো ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দাম অপরিবর্তিত থাকা অন্য সবজির মধ্যে পটল ৪০-৫০, সজনে ডাটা ৬০- ৮০, বরবটি ৬০-৭০, কচুর লতি ৭০-৮০, করলা ৬০-৭০, ধুন্দুল ৭০-৮০, গাজর ৩০-৪০, ঢেঁড়স ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজার ভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৩০-৫৫০ টাকা কেজি। আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮৫০ টাকায়। মাংসের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজিতে। পাঙাশ ১৫০-১৮০, রুই ২৫০-৪৫০, পাবদা ও টেংরা ৭০০-৮০০, শিং ৫০০-৬০০ এবং চিতল বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৭০০ টাকা কেজি।
অবশ্য ভোজ্যতেলের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কম থাকায় মেঘনা গ্রুপ ও সিটি গ্রুপ সয়াবিন তেলের দাম লিটারে দুই টাকা কমালেও বাজারে তা আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।